নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ১ সেপ্টেম্বর থেকে। সিরিজ সামনে রেখে মধুর সমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশ। তামিম, মুশফিক ও লিটন-তিন অভিজ্ঞ দলে ফেরায় একাদশ নির্ধারণে বেগ পেতে হচ্ছে। সবচেয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে— নিউজিল্যান্ড সিরিজে উইকেট সামলাবেন কে? অভিজ্ঞ মুশফিক নাকি তার অনুজ সোহান? সমাধান দিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। সিদ্ধান্ত হয়েছে- পাঁচ ম্যাসের শুরুর দুই ম্যাচ কিপিং করবেন সোহান, পরের দুই ম্যাচে কিপিং করবেন অভিজ্ঞ মুশফিক। এই চার ম্যাচের পারফরম্যান্স বিবেচনায় শেষ ম্যাচের উইকেটরক্ষক নির্বাচন করবে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। এমন সিদ্ধান্ত জানার পর পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

নিজেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আউটসাইডার হিসাবে উল্লেখ করে এক ফেসবুকে স্ট্যাটাসে মাশারাফি লিখেছেন, ‘১৬ বছর ধরে যে মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে, তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আপনি যত বড় ক্ষমতাধর মানুষ হোন না কেন, একটু বুঝে বলা উচিত। মুশফিক কীভাবে জাতীয় দলে এসেছে তা সবাই জানে। সিম্পলি তার ব্যাটিং দক্ষতায়।’ এমন সিদ্ধান্ত মুশফিক ও সোহান কারোর জন্যই স্বস্তিদায়ক নয় বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি লেখেন, ‘আমি শুধু ভাবছি এতে কি সোহানের জন্যও খুব ভালো হলো, যে দুই ম্যাচে সব দেখিয়ে টিকে থাকতে হবে, তাহলে বিগত দুই সিরিজ সে যা করল, তার কী হবে! লিটন কী বলবে? এখনো তো কিপিং ভুলেই যাবে।

’ নড়াইল এক্সপ্রেসখ্যাত এই সাবেক তারকা আরো লেখেন, ‘একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে শুধু কিপার হিসাবেই খেলা যেত, উদাহরণ ভূরি ভূরি। গিলক্রিস্ট আসার পর সব হিসাব পালটে যায়, যার সূত্র ধরে ভারতীয় দলে দেখেছি রাহুল দ্রাবিড়কেও কিপিং করতে, যাতে দল সুবিধামতো অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলাতে পারে। অবশ্যই সেটা সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। বিশ্ব ক্রিকেটের দুজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটারকে, সে আবার নিজ দলের খেলোয়াড়কে আপনি যুদ্ধ করে বাঁচতে বলবেন, সেটা ড্রেসিংরুম পর্যন্ত থাকা ভালো।’ কিপিংয়ের প্রশ্নে গণমাধ্যমে কোচ ডমিঙ্গোর বক্তব্যটি না দিলেই ভালো হতো বলে মনে করেন মাশরাফি।

সাবেক ফাস্ট বোলার লেখেন, ‘মুশফিককে পারফর্ম করতে হবে ১৬ বছর খেলার পর, এটা বলে দেওয়ার কিছু নেই। সে খুব ভালো করেই জানে। বরং বাইরে এভাবে বললে তার নিবেদনকে অসম্মানিত করা হয়, যা তার প্রাপ্য নয়। আবার দলের প্রয়োজনে তাকেই কিপিং করতে হতে পারে। তখন যদি সে ‘না’ বলে, সেটা কি ভালো শোনাবে? মুশফিকের গল্প আমরা সবাই জানি, তার নিবেদন কী পর্যায়ে। বাংলাদেশের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারদের আইডল সে।’ তিনি লেখেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত তারা তাদের মতো করে নেবে, এটাই তো স্বাভাবিক এবং অবশ্যই ভালোর জন্য নেবে।

সফল হলে তালি, না হলে গালি, যা সারা বিশ্বেই হচ্ছে। কে খেলবে, কোন পজিশনে খেলবে, কার রোল কী, এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা, যা ড্রেসিং রুমে শুরু, আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাইরে বলতে গেলে তো খেলোয়ারের পর চাপ সৃষ্টি হয় যা, তার স্বাভাবিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।’ ‘দলে প্রতিযোগিতা সব সময় দলের সেরাটা বের করে আনে, তবে সেটা সুস্থ হতে হবে। কাউকে আঘাত করে নয়।’